হ্যালো বন্ধুরা আপনাদের সবাইকে আমাদের সাইটে স্বাগতম। পোস্টের টাইটেল দেখেই হয়তো বুঝে গেছেন আজকে আমরা কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের ব্লগি...
নতুন ব্লগারদের পাঁচটি মারাত্মক ভুল
ব্লগার হওয়া অনেক মানুষের স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্ন পূরণ করতে মানুষ দিন-রাত জেগে কাজ করে। কিন্তু মাত্র কয়টি ভুলের কারণে সফলতা অর্জন করতে পারে। ব্লগিং যে শুধুমাত্র একটি স্বপ্ন তাও নয়। ব্লগিং অর্থ উপার্জনের অন্যতম সেরা একটি উপায় হিসেবে কাজ করে। কিন্তু সেই ভুলের কারণে অর্থ উপার্জন ও সম্ভব হয় না।
ব্লগিং ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেকেই অনেক স্বপ্ন নিয়ে আসেন। কিন্তু সত্য হলো সঠিক নিয়ম-কানুন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো না মেনে ব্লগ/ব্লগ পোস্ট প্রকাশ করে অনেকেই নিজের ব্লগিং ক্যারিয়ার নিজেই নষ্ট করে ফেলে।
ভুল উপায়ে কোন কিছু করলে যেমন সফলতা আসে না। ব্লগিং এর ক্ষেত্রেও আপনি যদি ভুল উপায় ব্লগিং শুরু করেন তাহলে আপনার ব্লগে ট্রাফিক বা ভিজিটর আসবে না। আর একটি ব্লগে ট্রাফিক বা ভিজিটর না আসলে সে ব্লগ এবং ব্লগার কে কখনোই সফলতা পূর্ণ বলা হবে না।
আপনি ভুল নিয়মে ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করার পর যত কষ্টই করেন না কেন আপনি কখনোই সফলতা অর্জন করতে পারবেন না।কারণ ভুল নিয়ম অনুসরণ করে কাজ করলে গুগল আপনার সাইটকে কখনোই রেঙ্ক করাবে না। কারণ ভুল মানুষ বা ভুল নিয়ম কখনো সফল হতে পারে না, এটাই বাস্তব।
আজ আমরা যেই ৫ টি ভুল নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি, সেই ৫টি ফুল প্রায় সব নতুন ব্লগার এর মধ্যেই দেখা যায়। আর এই ৫ টি ভুলের কারণেই নতুন ব্লগাররা সফলতা অর্জন করতে পারে না। এই ভুল গুলা যেন নতুনদের মাঝে আর
দেখা না যায় সেই কারণেই আজকের আমাদের এই পোস্ট। আশা করি আজকের এই পোষ্ট টি নতুন ব্লগারদের উপকারে আসবে। সাথে এই বিষয়গুলো আপনাকে আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য সঠিক নির্দেশনা প্রদান করবে।
একজন সাকসেসফুল ব্লগার হওয়ার জন্য, আপনি যখন বিভিন্ন প্লাটফর্মে যাবেন। তখন স্বাভাবিক ভাবে সেই প্লাটফর্ম সম্পর্কে আপনার অনেক কিছুই অজানা থাকবে। আপনি যদি সেই অজানা তথ্য না জেনেই কাজ শুরু করে দেন।
তাহলে আপনার সব কষ্ট বৃথা হবে। তাই নতুনদের কে সেই না জানা বিষয়গুলোর উপর বেশি নজর দিতে হবে। যাতে আপনি আপনার সেই ভুলগুলো সংশোধন করে নিতে পারেন। আর এই সকল ভুল গুলোর সংশোধনই আপনাকে সফলতার দরজা পর্যন্ত নিয়ে যাবে।
১. নিম্ন মানের/বিনামূল্যের ডোমেইন ব্যবহার করা
একটি ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন ই সব কিছু। একজন মানুষের জন্য যেরকম তার নাম সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক সেরকমই একটি ওয়েবসাইটের জন্য ওয়েবসাইটির ডোমেইন টিও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।
আপনারা তাইলে শুরুতে শেখার জন্য বিনামূল্যের বা নিম্নমানের ডোমেইন ব্যবহার করতে পারেন। আমিও শুরুর দিকে বিনামূল্যের ডোমেইন ব্যবহার করতাম।
কিন্তু আপনি যখনই ব্লগিং পেশাদার ভাবে শুরু করতে যাবেন, তখন একটি ভালো মানের ডোমেইন ক্রয় করে শুরু করলে আপনার জন্য ভালো হবে। অনেকে টপ লেভেল এ প্রবেশ করেও অনেক সময় নিম্নমানের বা বিনামূল্যের ডোমেইন ব্যবহার করে থাকে, যা মারাত্মক একটি ভুল।
এখনকার সময়ে একটি ভালো মানের ডোমেইন এর দাম যে অনেক বেশি তাও নয় ৭০০-৮০০ টাকা হলেই একটি ডটকম(.com) ডোমেইন এখন পাওয়া যাচ্ছে।
আর এখন ডট নেট(.net), ডট ইনফো(.info), এবং ডট ওআরজি(.org) ডোমেইন ও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ডোমেইন-হোস্টিং ক্রয়-বিক্রয় ওয়েবসাইটে।
কিভাবে একটি ডোমেইন ক্রয় করবেন? বিস্তারিত ভিডিওতে।
একটা বিষয় সবসময় মনে রাখবেন ফ্রিতে পাওয়া জিনিস কোন সময় ভালো হয় না, ভালো হলেও সেই জিনিসটা পেতে আপনাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হবে। তাই ব্লগিং কাজ যদি করতেই চান অল্পকিছু টাকা দিয়ে একটি ডোমেইন কিনে কাজ শুরু করুন।
মানুষের নামের সাথে যে রকম একটি সুন্দর পদবী লাগে, ওয়েবসাইটের ডোমেইনের নাম এর সাথে ঠিক সেরকমই ভালো মানের একটি ডোমেইন লাগে। এটি আপনার সাইটের ভিজিটরদের আকর্ষণ করে।
২. নিম্ন মানের/বিনামূল্যের হোস্টিং ব্যবহার করা
ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন এর পরেই আসে হোস্টিং। হোস্টিং হলো একটি সাইটের দ্বিতীয় স্তর। ডোমেইন ছাড়া যে রকম আপনার সাইটকে কেউ চিনবে না হোস্টিং ছাড়া আপনার সাইটে আপনি কোন প্রকার তথ্য আপলোড করতে পারবেন না।
হোস্টিং হলো আপনার সাইটের পোস্ট আপনার সাইটের পেজ এবং আপনার সাইটের সকল প্রকার তথ্য রাখার জায়গা। যেখানে আপনার সাইটের সমস্ত ডাটা জমা থাকে।
আপনি যদি ব্লগার এর মাধ্যমে ব্লগিং শুরু করেন তাহলে আপনাকে হোস্টিং ব্যবহার করতে হবে না। আর আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন তাহলে আপনাকে হোস্টিং ব্যবহার করতে হবে।
কারণ ব্লগার সাইটের পোস্ট, পেজ রাখার জন্য নিজস্ব স্টোরেজ আছে। কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের পোস্ট,পেজ রাখার জন্য কোন নিজস্ব স্টোরেজ নেই ওয়ার্ডপ্রেসে স্টোরেজ কিনে নিতে হয়।
আমি ব্লগার নিয়ে কাজ করি।
তাই ওয়ার্ডপ্রেস বা হোস্টিং সম্পর্কে একটু কম বুঝি। উপরে দেওয়া তথ্যে কোন ভুল থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। পারলে কমেন্ট করে ভুলটা ধরিয়ে দিবেন। অগ্রিম ধন্যবাদ।
৩. নিম্ন মানের/বিনামূল্যের থিম ব্যবহার করা
এ বিষয় নিয়ে বেশি কিছু বলেন নাই কারন আমি নিজেও নিম্নমানের থিম ব্যবহার করি। আর শুরুর দিকে নিম্নমানের থিম ব্যবহার করা আমার কাছে মনে হয় না খারাপ কিছু। তবে আপনাদের যাদের সামর্থ্য আছে তারা থিম কিনে ব্যবহার করাটাই আমার কাছে ভাল মনে হয়।
আর যাদের সামর্থ্য নেই তারা ফ্রি থিম ব্যবহার করতে পারেন। পেশাদার ব্লগারদের জন্য নিম্নমানের থিম ব্যবহার করা একটি মারাত্মক ভুল। বিনামূল্যের বাহা নিম্নমানের থেমে প্রফেশনাল কোডিং থাকে না।
এই কারণেই বিনামূল্যের থিম ব্যবহার করা ব্লগিং এর জন্য খারাপ দিক। যেমন একজন মানুষের শরীরের ভিতর যদি কিছু না থাকে তাহলে ওষুধ দিয়ে কোন কাজ করানো সম্ভব নয়।
সেরকম একটি ওয়েবসাইট এর মধ্যেই যদি কিছু না থাকে তাহলে আপনি যত কষ্টই করেন না কেন কোন কাজ হবে না। এসইও যত ভালো হয় করেন না কেন কাজে আসবে না। আপনার সাইট গুগলে ভালোভাবে রাঙ্ক করবে না।
৪. নিম্নমানের পোস্ট করা
ব্লগিং করে ইনকাম করতে চাইলে এই বিষয়টার উপর সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে। আপনি যদি নিম্নমানের পোস্ট করে থাকেন তাহলে গুগল এডসেন্স আপনাকে কখনোই আপনাকে টাকা দিবে না।
মানুষ ব্লগিং-এ আসে নিজেকে সবার মাঝে পরিচিত করার জন্য সাথে কিছু টাকা ইনকাম করার জন্য। কিন্তু যদি আপনার প্রকাশিত পোস্ট বা আর্টিকেল অন্যদের মন মত না হয় তাহলে আপনার ব্লগ এবং
আপনি দুইটার কোনটাই আপনার ভিজিটর দের কাছে ভালো লাগবে না। আপনাকে একটি বিষয় সবসময় মনে রাখতে হবে, আপনার ব্লগে প্রকাশিত আর্টিকেল এর মানই আপনার ব্লগের পরিচয়।
নতুন ব্লগার মনে করেন ব্লগিং করা অনেক সহজ তাই তারা নিম্নমানের, অল্প শব্দের আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করে দেন, এবং মনে করেন যে আমি ব্লগার হয়ে গেছি। কিন্তু সত্যি বলতে এটা কখনো সম্ভব নয়।
একটি ওয়েবসাইট করে আর্টিকেল পাবলিশ করলেই সে ব্লগার হয়ে যায় না। ( আমি নিজেও এখনো সাকসেসফুল ব্লগার হয়ে উঠতে পারি নাই। আমি ব্লগার হিসাবে দাবী করা সম্পূর্ণ ভুল )। একটা আর্টিকেল লিখতে কমপক্ষে এক থেকে দুই ঘন্টা সময় দিতে হবে।
আপনাকে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলোকে একসাথে করে একটি ভালো মানের আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে, সাথে আপনি যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখেছেন সেই বিষয়ের উপর আরো ১০ টি ওয়েবসাইট ঘুরে ঘুরে আপনাকে দেখতে হবে।
যারা এই বিষয়গুলোকে অবহেলা করে তারা কখনোই ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জন করতে পারবে না। অল্প শব্দের পোস্ট/আর্টিকেল লিখলে গুগল সেই আর্টিকেলকে রেঙ্ক করবে না,
গুগলে পোস্ট সহজে ইন্ডেক্স হবে না, ইত্যাদি সমস্যায় পড়তে হবে। একটি আর্টিকেল লেখার কিছু নিয়ম থাকে যে গুলো অনুসরণ করে আমাদের আর্টিকেল লিখতে হয়। একটি আর্টিকেল এর অনেকগুলো অংশ থাকে।
এই অংশগুলোকে সাজিয়ে সুন্দরভাবে আপনার ভিউয়ারদের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। একজন মানুষের যেরকম মাথা, শরীর, হাত-পা থাকে। একটি আর্টিকেল ঠিক সেরকম ভাবেই সাজাতে হয়।
যারা এই বিষয়গুলো মেনে ব্লগিং এ কাজ করতে পারবে তাদের সফলতা একদিন আসবেই।
৫. কিওয়ার্ড রিসার্চ না করা
আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর একটি আর্টিকেল লিখতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই সেই বিষয়ে গবেষণা করতে হবে। আপনার আর্টিকেলের কোন শব্দটির মান বেশি
এবং কোন শব্দটির মানকম এটি আপনাকে যাচাই করতে হবে। এই বিষয়টা অনেক ব্লগারই এড়িয়ে চলেন। কিন্তু এটাই একটি আর্টিকেল কে গুগলে রেঙ্ক করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আপনাকে একটি আর্টিকেল লেখার আগে কয়টা কি ওয়ার্ড বা শব্দ কে লক্ষ্য করে আর্টিকেলটির লিখতে হয়। আর কোন শব্দ বা কিওয়ার্ড কে লক্ষ্য করে লিখবেন সেটা যাচাই করতে আপনাকে সাহায্য করে কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল।
কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল ব্যবহার করে আপনি কিওয়ার্ড সম্পর্কে, ওই কিওয়ার্ড টি মাসে কয়বার গুগলে সার্চ করা হচ্ছে এ সম্পর্কে, এই কিওয়ার্ড সার্চ করে কেউ আপনার সাইটে আসলে আপনি গুগল এডসেন্স থেকে কত টাকা পেতে পারেন
এবং ঐ কিবোর্ডে প্রতিযোগিতা কেমন সবকিছু জানতে পারবেন এই কী-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলের মাধ্যমে। আশা করি আপনারা কিওয়ার্ড রিসার্চ সম্পর্কে বুঝতে পারছেন। এটি একটি সাইট কে সবার সামনে আনতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আর্টিকেলটিতে কোন ভুল হয়ে থাকলে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ 💗
No comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.