মরিয়ম ফুল একটি বিস্ময়কর ফুল। এটি মরুভূমির শুষ্ক আবহাওয়ায় বছরের পর বছর শুকনো অবস্থায় থেকেও বাঁচে থাকে। বৃষ্টিপাতের পর এটি আবার তাজা হয়ে...
মরিয়ম ফুল একটি বিস্ময়কর ফুল। এটি মরুভূমির শুষ্ক আবহাওয়ায় বছরের পর বছর শুকনো অবস্থায় থেকেও বাঁচে থাকে। বৃষ্টিপাতের পর এটি আবার তাজা হয়ে ওঠে। এই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Anastatica hierochuntica (অ্যানাস্ট্যাটিকা হাইরোচুনটিকা)।
মরিয়ম ফুল কোথায় পাওয়া যায়
মরিয়ম ফুলের আদি নিবাস মধ্যপ্রাচ্য ও সাহারার বিস্তীর্ণ মরু অঞ্চল। এছাড়াও, এটি উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ ইউরোপ, মধ্য এশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইত্যাদি দেশেও পাওয়া যায়।
মরিয়ম ফুল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়
বাংলাদেশে মরিয়ম ফুলের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হলো মরুভূমি। তবে, বর্তমানে এটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হয়। মরিয়ম ফুলের চাষের জন্য শুষ্ক আবহাওয়া এবং ভালো মানের মাটি প্রয়োজন।
বাংলাদেশে মরিয়ম ফুলের চাষ প্রধানত হয় সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা, এবং বরিশাল বিভাগে। এছাড়াও, রাজধানী ঢাকায়ও কিছু কিছু স্থানে মরিয়ম ফুলের চাষ হয়।
মরিয়ম ফুলের চাষ
মরিয়ম ফুলের চাষ খুবই সহজ। এটি সাধারণত বীজ থেকে চাষ করা হয়। বীজ বপনের আগে মাটি ভালোভাবে চাষ করে নিতে হবে। বীজ বপনের পর মাটি হালকা করে ঢেকে দিতে হবে। বীজ থেকে চারা গজানোর জন্য প্রায় ১০-১৫ দিন সময় লাগে।
মরিয়ম ফুলের চারা গজানোর পর সেচ দিতে হবে। তবে, অতিরিক্ত সেচ দেওয়া যাবে না। মরিয়ম ফুল শুষ্ক আবহাওয়ায় ভালো জন্মে। তাই, এটিকে রোদ থেকে রক্ষা করার প্রয়োজন নেই।
মরিয়ম ফুলের চারা যখন ৭-৮ ইঞ্চি লম্বা হয় তখন এটিকে সার দিতে হবে। সার হিসেবে গোবর সার, টিএসপি, এবং এমওপি ব্যবহার করা যেতে পারে।
মরিয়ম ফুল সাধারণত জুন-জুলাই মাসে ফোটে। ফুল ফোটার পর এটি শুকিয়ে যায়। তবে, বৃষ্টিপাতের পর এটি আবার তাজা হয়ে ওঠে।
মরিয়ম ফুলের ব্যবহার
মরিয়ম ফুলের অনেক ব্যবহার রয়েছে। এটি ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। মরিয়ম ফুলের রস সর্দি-কাশি, পেটের পীড়া, এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, মরিয়ম ফুলের রস ত্বকের পরিচর্যার জন্যও ব্যবহার করা হয়।
মরিয়ম ফুলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি শুকিয়ে গেলেও এর বীজ অক্ষত থাকে। এই বীজ থেকে নতুন চারা গজাতে পারে। এই কারণে মরিয়ম ফুলকে "মৃত্যুঞ্জয়ী ফুল" বলা হয়।
No comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.