প্রেগন্যান্সির কতদিন পর বুকে দুধ আসে
গর্ভধারণের পর থেকেই নারীর শরীরে নানা পরিবর্তন আসতে থাকে। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি হল স্তনের বৃদ্ধি এবং দুধ উৎপাদন শুরু হওয়া। স্তনের বৃদ্ধি সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম দিকেই শুরু হয়। তবে দুধ উৎপাদন শুরু হয় গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে।
১: স্তনের পরিবর্তন
গর্ভধারণের পর স্তনে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে:
স্তনের আকার এবং ওজন বৃদ্ধি পায়।
স্তনের বোঁটা এবং areola (স্তনের চারপাশের বাদামী অংশ) গাঢ় হয়ে যায়।
স্তনের বোঁটা থেকে সাদা বা হালকা হলুদ রঙের তরল নিঃসৃত হতে পারে। এই তরলকে কোলোস্ট্রাম বলে।
কোলোস্ট্রাম হলো শিশুর জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি তরল। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবডি থাকে যা শিশুকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
২: দুধ উৎপাদন
গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে স্তনে দুধ উৎপাদন শুরু হয়। তবে এই সময় দুধের পরিমাণ খুবই কম থাকে। প্রসব পরবর্তী সময়ে দুধের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
দুধ উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে স্তনের মধ্যে থাকা দুটি গ্রন্থি, ল্যাক্টোজেনিক গ্রন্থি এবং অ্যাড্রিনোকর্টিক্যাল গ্রন্থি। ল্যাক্টোজেনিক গ্রন্থি দুধ উৎপাদন করে, আর অ্যাড্রিনোকর্টিক্যাল গ্রন্থি দুধ উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে।
৩: দুধের গুণমান
দুধের গুণমান নির্ভর করে মায়ের খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাস্থ্যের উপর। মায়ের খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন থাকা উচিত। মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে দুধের গুণমানও ভালো হয়।
৪: দুধের পরিমাণ
দুধের পরিমাণ নির্ভর করে মায়ের দুধদানের প্রবণতার উপর। মা যত বেশি দুধ পান দেবেন, দুধের পরিমাণ তত বেশি হবে।
৫: দুধদানের উপকারিতা
দুধদানের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শিশুর বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি করে।
মায়ের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
উপসংহার
গর্ভধারণের পর স্তনের পরিবর্তন এবং দুধ উৎপাদন শুরু হওয়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করে মায়ের শরীরের হরমোন। দুধদান শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই মায়েদের উচিত নিয়মিত দুধ পান দেওয়া।